পৃথিবীর সর্বাধিক উত্তোলনকৃত প্রাকৃতিক সম্পদ হলো বালু ও নুড়ি পাথর। সুস্পষ্ট পরিসংখ্যান না থাকলেও জাতিসঙ্ঘের কর্মকর্তারা মনে করেন, ওজনের দিক থেকে বিশ্বের উত্তোলনকৃত খনিজসম্পদের ৮৫ শতাংশই এই দু’টি পদার্থ। স্যান্ডস্টোরিজ নামে বালুবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটের প্রতিষ্ঠাতা কিরান পেরেইরা বলেন, ‘এটিও বাতাসের মতো, যে বাতাস থেকে আমরা শ্বাস নেই কিন্তু তা নিয়ে আমরা চিন্তা করি না। যদিও বাতাস ছাড়া বাঁচা সম্ভব নয়।’
বালু সবার কাছেই অসীম সম্পদ মনে হয়, তাই এটি প্রকৃতিতে যে হারে সৃষ্টি হয় তার চেয়ে বেশি হারে উত্তোলন করা হয়। ২০১৪ সালের জাতিসঙ্ঘের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, প্রতি বছর চার হাজার কোটি টন বালু ও নুড়ি উত্তোলন করা হয়। আর প্রতি বছর শুধু বৈধভাবে এ দু’টি পদার্থ উত্তোলন করা হয় ৭ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের, যা আফ্রিকার দেশ কেনিয়ার মোট জাতীয় উৎপাদনের সমান।
আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে বালুর অনেক ব্যবহার রয়েছে। কাচ তৈরিতে ব্যবহৃত হয় বালু। সিলিকন ডাইঅক্সাইডের মতো বেশ কিছু খনিজ উপাদান পাওয়া যায় বালু থেকে। ওয়াইন, পরিচ্ছন্নতা দ্রব্য, টুথপেস্টসহ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত অনেক কিছুতে ব্যবহৃত হয় সিলিকন ডাইঅক্সাইড। কম্পিউটার ও স্মার্টফোনে ব্যবহৃত মাইক্রোচিপস তৈরিতে প্রয়োজন হয় বালু। তবে প্রাকৃতিক এ উপাদানটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় নির্মাণ শিল্পে। বিশ্বের অর্ধেকের বেশি লোক এখন শহরে বাস করে। শহরের বাসস্থানসহ প্রায় সব স্থাপনা তৈরিতেই ব্যবহার হয় বালু। জাতিসঙ্ঘ মনে করে, ২০৩০ সাল নাগাদ মোট জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ শহরে বসবাস করবে। তাই প্রতিনিয়ত ভবন তৈরি ও শহর সম্প্রসারণে প্রয়োজন হয় কংক্রিট ও পিচ, এ দুটো তৈরিতেও প্রচুর বালু লাগে।