আসন্ন পবিত্র রমজান উপলক্ষ্যে সাংবাদিকদের উপস্থিতেতে রবিবার সচিবালয়ে ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে এক সভায় বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ ব্যবসায়ীদেরকে অনুরোধ করে বলেছেন, “আপনারা রজমান মাসের পবিত্রতা রক্ষা করার জন্য আপনাদের বিবেক অনুসারে মানুষকে সঠিকভাবে (নিত্যপণ্য) সরবরাহ করবেন। যেহেতু ব্যবসা করেন লাভও করবেন কিন্তু সহনীয় পর্যায়ে, এটাই বিনীত অনুরোধ আপনাদের কাছে।”
প্রতিবছর রোজাকে সামনে রেখে ব্যবসায়ীরা পণ্যের দাম না বাড়ানোর আশ্বাস দিলেও পরিস্থিতির খুব একটা হেরফের দেখা যায় না। রোজায় বেশি দামে পণ্য কিনতে হয় বলে অভিযোগ থাকে ক্রেতাদের।
এবারও রোজায় পণ্যের দাম সহনীয় থাকবে বলে কয়েকদিন আগে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকনের সঙ্গে আশ্বাস দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তবে রোজার আগে রাজধানীর বাজারগুলোতে মুরগি-পেঁয়াজের দাম বেড়ে গেছে।
চিনি ও পেঁয়াজ ছাড়া অন্য সব নিত্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক আছে আছে জানিয়ে তোফায়েল বলেন, “পেঁয়াজের দাম যেভাবে বেড়েছিল তার থেকে এখন সহনীয় পর্যায়ে আছে।
“পেঁয়াজের যা চাহিদা দেশীয় উৎপাদন থেকে হয় না। তাই ভারত থেকে পেঁয়াজ আনতে হয়। বর্ডার দিয়ে যদি ভালোমত আসতে না পারে, জ্যামে পড়ে, যদি আসতে পাঁচ দিন লাগে তবে পেঁয়াজ পচে যায়, নষ্ট হয়, এটাও মাথায় রাখতে হবে।”
বিশ্ববাজারে দাম অনেক কমে যাওয়ায় এবার রমজান মাসে চিনির দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই বলেও জানান বাণিজ্যমন্ত্রী।
এছাড়াও রোজার শুরুতে একসাথে পুরো মাসের বাজার না করে ধাপে ধাপে পণ্য কিনতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তোয়ায়েল আহমেদ।
“রোজার প্রথমে একসাথে পুরো মাসের বাজার করলে এর প্রভাব পড়ে। ফলে প্রথম রোজার দিকের দাম দিয়ে সারা মাসের দাম বিচার করা ঠিক না।”
সভায় একজন ব্যবসায়ী রোজায় বিভিন্ন নিত্যপণ্যের পাইকারির পাশাপাশি খুচরা দাম নির্ধারণের পরামর্শ দেন।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজটের কারণে পণ্য পরিবহনে ঝামেলা হচ্ছে জানিয়ে ওই ব্যাবসায়ী বলেন, অনেক কাঁচা পণ্য নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, গতবারের চেয়ে এবার মসুর ডালের দাম ২১ দশমিক ৪৩ শতাংশ, ছোলা ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ, রসুন (আমদানি) ৪৫ দশমিক ৫ শতাংশ, রসুন (দেশি) ৩৯ শতাংশ, চিনি ১৬ শতাংশ, লবণ ৩ দশমিক ০৮ শতাংশ এবং গরুর মাংসের দাম ৩ দশমিক ৯০ শতাংশ কমেছে।
একজন মাংস ব্যাবসীয় জানান, রোজার মাসে মাংসের দাম নির্ধারণ করতে সোমবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সঙ্গে মাংস ব্যাবসায়ীদের সভা হবে।
সভায় ব্যাবসায়ীরা তাদের কাছে মজুদ থাকা বিভিন্ন পণ্যের খতিয়ান এবং পাইকারি ও খুচরা দাম তুলে ধরেন। সাধারণত রোজার মাসে যেসব পণ্যের বেশি চাহিদা থেকে সেগুলোর সঙ্কট হবে না বলেও মন্ত্রীকে আশ্বস্ত করেন তারা।
খাদ্য সচিব শাহাবুদ্দিন আহমদ, বাণিজ্য সচিব শুভাশীষ বসু ছাড়াও ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সভায় উপস্থিত ছিলেন।