Home » জাতীয় » ব্যারিষ্টার মওদূদের বিপক্ষে প্রার্থিতা ঘোষনা তরুণ জামায়ত নেতার

ব্যারিষ্টার মওদূদের বিপক্ষে প্রার্থিতা ঘোষনা তরুণ জামায়ত নেতার

সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে প্রসঙ্গে জামায়ত নিয়ে মন্তব্য তীর্যক  মন্তব্য করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার স্বীকার হয়েছেন বিএনপি নেতা ব্যারিষ্টার মওদূদ। এই উত্তেজনার রেশ না কাটতে আগামী নির্বাচনে ব্যারিষ্টার মওদূদের বিরুদ্বে প্রার্থী হওয়ার ঘোষনা দিয়েছেন তরুণ এক জামায়াত নেতা। ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা তরুন এই জামায়াত নেতা ইশতিয়াক হায়দার চৌধুরী আজ তার ফেইসবুক ওয়ালেই এই প্রার্থিতার ঘোষনা দেন। পাঠকের জন্য তার এই ঘোষনা টি নিচে হুবুহুব তুলে দেয়া হলো-

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
প্রিয় সামাজিক যোগাযোগের প্রবীণ নবীন বন্ধু স্বজন আসসালামু আলাইকুম।
আজ আপনাদের সামনে আমি অতীব আলোচিত একটি বিষয় নিয়ে আমার মতামত উপস্থাপন করছি। আপনারা জানেন আসন্ন সিলেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন কে সামনে রেখে জাতীয় রাজনীতি তে দীর্ঘদিন পর নির্বাচনী হাওয়া তৈরি হয়েছে এবং এই নির্বাচন এখন আলোচনার শীর্ষ ইস্যু।
এরমাঝে এই নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের প্রার্থী নিয়ে ২০ দলের জোটের মাঝে তৈরি হয়েছে নানামুখী আলোচনা। কেউ কেউ তার অবস্থান অনুযায়ী মন্তব্য করতে পারদর্শিতার পরিচয় দেননি। এরমধ্য অন্যতম ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। তিনি অত্যন্ত দাম্ভিকতার সাথে ফ্যাসিবাদ মনোভাবের সুরে বলেছেন দেশে দুটি দল আর অন্যদল গুলো নাকি দুইশত থেকে চারশত ভোট পাবে। যা স্পষ্টত জনাব মওদুদ আহমেদের অপরিণামদর্শী ও অকৃতজ্ঞ বচন ছাড়া কিছু নয়।

তাই আমি ইশতিয়াক হায়দার চৌধুরী মনে মনে সংকল্প করেছি যদি তরুণ প্রজন্ম আমাকে সামাজিক যোগাযোগ থেকে মনোনয়ন দিয়ে থাকে তবে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে আমি আমার আসন নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ, কবিরহাট ও সদর পূর্বাঞ্চল) থেকে নির্বাচনে লড়তে প্রস্তুত আছি।

এখন প্রশ্ন হলো মওদুদ সাহেবের পরোক্ষ এই উক্তি কাদের উদ্দেশ্য বুঝতে কষ্ট না হলে কেনো এতো নবীন হিসাবে আমি নির্বাচন করতে চাচ্ছি।
সে দলের কি পরিণত যুবক নেই??????
উত্তর হচ্ছে আপনার প্রতিযোগী যখন ব্যক্তিত্বে আপনার চেয়ে অনেক পিছিয়ে থাকবে তখন তার সাথে পরীক্ষিত মার্জিত রুচিশীল এবং অভিজ্ঞ লোক নির্বাচন করার চেয়ে অনভিজ্ঞ কেউ করায় শ্রেয় কারণ প্রতিযোগীর দুর্বলতা একজন সজ্জন ব্যক্তিকে তার সপ্রতিভ কাজ বাধা সৃষ্টি করবে।
ঐ আসনে জামায়াতের যারা আছে তার আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রতিষ্ঠিত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যক্তিত্ব। তাদের মাধ্যমে আমরা আরো বৃহত্তর সেবা প্রত্যাশা করি।

 

 

প্রার্থী ইশতিয়াক হায়দার চৌধুরীর ব্যক্তিজীবন।
আমি ১৯৯০ সালে ঢাকার স্বামীবাগে জন্মগ্রহণ করি। আমার মায়ের থেকে শুনেছি তখন নাকি ঢাকায় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে।
কিন্তু এখনকার স্বৈরাচার তৎকালিন স্বৈরাচার থেকে নির্দয় ও পৈশাচিক। তাই জন্মের মাঝে স্বৈরাচার হটেছে জীবন সার্থক করার পথে এই স্বৈরাচার পতনের একজন কর্মী হতে পারলে নিজেকে গৌরবিত ভাববো।
আমার পিতা নরুল হায়দার চৌধুরী। অবসরপ্রাপ্ত সরকারী চাকুরীজীবী।
মা শাহানাজ চৌধুরী। একজন গৃহিণী। তিনি একিসাথে একজন রাজনৈতিক কর্মী ছিলেন। আমাদের স্থায়ী নিবাস ভূঞ্চারহাটের দক্ষিণে খুবুর উদ্দিন মিয়া বাড়ী।
আমার দাদা শেখ আহম্মদ চৌধুরী ছিলেন জুড়ি বোর্ড এর সদস্য।
ছোটবেলা আব্বুর চাকুরীর জন্য আমরা মাইজদি থাকতাম সেখানে পড়ালেখা করতাম। তবে বাড়ীর প্রতি ছিলো এক অনন্য আবেগ। দুই ঈদ আমরা বাড়ী তে করতাম। প্রতি ঈদে গ্রামে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি ক্রিকেট ম্যাচ হতো।
আমি বিএনপি থেকে অংশগ্রহণ করে ওপেনিং নেমে দীর্ঘক্ষণ ব্যাটিং করে বিএনপির ম্যাচ জয়ে ভূমিকা রাখি। যা তখন প্রবীণদের মাঝে প্রশংসিত হয়।
সন্ধ্যাকালীন সময় আমরা বাজারে ব্যাংক রোডে তরুণ প্রজন্মের সাথে গল্পের আসরে যোগ দিতাম।খেলাধুলার সুবাদে ভিন্নধর্মী মানুষের সাথে আমার ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠে। এবং তাদের আমন্ত্রণে তাদের হয়ে প্রতিযোগিতামূলক ক্রিকেটে অংশগ্রহণের সুযোগ হয়।
এছাড়া আমি ছোটবেলা থেকে ছাত্র রাজনীতি তে সচেতন।আমি আমার অকুণ্ঠ সমর্থন ও ভালবাসা বাংলাদেশে ইসলামি ছাত্রশিবিরের জন্য বরাদ্দ করে রেখেছি। এবং এই ভালোবাসা আমাকে ও নানামুখী ভালোবাসায় সিক্ত করেছে। একবার বাড়ির মসজিদে নামাজ পড়ে বের হয়ে দেখি স্কুল পড়ুয়া কিছু কিছু ভাই এসে দাঁড়িয়ে আছে পরিচিত হবে বলে কারণ আমি শিবির সমর্থন করি…..
আপাতত এতোটুকু ব্যক্তিজীবন। এবার আসি ঐ আসন নিয়ে আমার পরিকল্পনা।

আপনারা জানেন ৬৮ হাজার গ্রাম বাংলাদেশে। এই গ্রাম গুলো বাচলে বাংলাদেশ বাচবে। প্রকৃতপক্ষে মহানগর বাদে সব এলাকায় এখন গ্রাম্য পরিবেশ বিরাজমান।
যদি ও নগর বলে আমরা যা বুঝছি তা হচ্ছে অপরিকল্পিত শহর, মানুষের চাপ বাস অনুপযোগী একটি শহর।
কিন্তু এখন থেকে আমরা সচেতন হলে আমাদের গ্রাম সমূহ কে বাঁচাতে পারবো। এইজন্য দরকার সুষ্ঠ পরিকল্পনা, দক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং সময় সচেতন জনপ্রতিনিধি।
যার ফলে গ্রাম তার রুপ ধরে রেখে আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করে জীবনযাত্রার মান কে উন্নত করতে পারবে।
এইজন্য আমার প্রথম পরিকল্পনা গ্রাম কে বাঁচিয়ে রাখা এবং আধুনিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করা।
অনেকে গ্রাম কে নগর করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে আমার ভয় হচ্ছে তারা কিনা “ডোমাস অরিয়া” বা স্বর্ণগৃহ নির্মান করার নামে গ্রামে আগুন লাগিয়ে দেয় কিনা….

শিক্ষা বিস্তারে সর্বস্তরের জনগণ কে ঐক্যবদ্ধ করে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু রাখা এবং তার সাথে সময়োপযোগীতা সংযোজন করা।
নবীন ও প্রবীণের মাঝে চিন্তার ফারাক কে কনশাসনেস প্রোগ্রামের মাধ্যমে কমিয়ে আনা। দীর্ঘদিন থেকে চলে আসা কুসংস্কার কে সামাজিক স্থিতিশীলতা কে গুরত্ব দিয়ে আস্তে আস্তে দূর করার উদ্যোগ নেওয়া।

অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা জন্য নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ। কাজের নানামুখী পরিবেশ তৈরি করে শহরের উপর চাপ কমানোর ব্যবস্থা করা। সমবায় সমিতির নামে যে রক্তচোষা অর্থনীতি গ্রামে ছড়িয়ে পড়েছে তা নিয়ন্ত্রণে আনা।
চাষাবাদ করে আসা জমির অনুপযোগিতা কেনো তা বের করা নানামুখী প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
শহরের বাহিরে আলাদা জনপ্রিয় বাজার তৈরি করার মাস্টার প্লান হাতে নেওয়া।

তরুণ প্রজন্ম কে বিপথগামী না হতে পারে সেজন্য সচেতন পর্যবেক্ষণ রাখা। রাজনৈতিক সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক সেক্টরে তরুণদের উৎসাহিত করা।
যার যার ইচ্ছা অনুযায়ী মানবিক ও নৈতিক প্রতিযোগিতার গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত করা।
রাজনৈতিক পদবির মাধ্যমে প্রশ্রয় নিয়ে নেশাদায়ক ব্যবসা চিরতরে বন্ধ করা।

সুস্থ দেহ সুস্থ মন এই বিষয় কে সামনে রেখে স্যানিটেশন ব্যবস্থায় জোর দেওয়া।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নিশ্চিত করা।সংখ্যালঘুর প্রতি ভালোবাসা নির্যাতন উভয় যেনো ভোটের রাজনীতির নিয়ামক না হয় তা ব্যাপারে কোঠর হওয়া।

গ্রামের মুক্ত হাওয়া বাতাসে বড় হওয়া তারুণ্য শারীরিক সক্ষমতা সম্পন্ন হয় তাদের আন্তর্জাতিক পর্যায় এথলেট হিসাবে পরিচিত করে দেশের ক্রিড়া ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী সফলতা অরজনে ভূমিকা রাখা।

যাতায়াত ব্যবস্থা সংকটকালিন সমাধান নয় দীর্ঘমেয়াদী সমাধানের লক্ষ্য রেখে কাজ করা। যেমন টা আমরা পড়েছিলাম প্যারিসের রাস্তা সম্পর্ক।

উপরোক্ত পরিকল্পনা সামনে রেখে আমি আগামী নির্বাচনে ব্যরিষ্টার মওদূদের বিরুদ্বে  প্রার্থীতা ঘোষনা করছি।
শুভেচ্ছাসহ
ইশতিয়াক হায়দার চৌধুরী

About buddin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

অস্বাস্থ্যকর শহর: ঢাকাকে ছাড়িয়ে শীর্ষে দিনাজপুর

তৌহিদুর রহমান তুহি, ঢাকা: বাংলাদেশে সবচেয়ে দূষিত শহরের তালিকায় রাজধানী ঢাকাকে পিছনে ফেলে শীর্ষে উঠে ...

চ্যাম্পিয়নকে হারিয়ে এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন ভারত

এশিয়া কাপের ১৬তম আসরে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে শিরোপা ঘরে তুললো ভারত। এর মাধ্যম আটবার ...

জাতিসংঘের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

চৌধুরী তুহি, ঢাকা: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ...

মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক-পরিচালক এর দুই বছর কারাদণ্ড, মার্কিন দূতাবাসের উদ্বেগ

তৌহিদুর রহমান তুহি, ঢাকা: বাংলাদেশে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ ...