Home » উৎসব » রথ সম্পর্কিত জানা-অজানা কিছু তথ্য

রথ সম্পর্কিত জানা-অজানা কিছু তথ্য

শুভ বিশ্বাস,কলকাতা

সুপ্রভাত, আজ ২৯শে আষাঢ় ১৪২৫ ইং ১৪ ই জুলাই ২০১৮ শনিবার শ্রীশ্রী জগন্নাথদেবের রথযাত্রা মহোৎসব। চলুন জেনে নিই রথ সম্পর্কিত জানা-অজানা কিছু তথ্য:

১. জগন্নাথ প্রতিবছর নব রথে উঠে। নব মানে নতুন আবার নব মানে নববিধা ভক্তি। মানে ভক্তির রথে জগন্নাথ উঠে। ভক্তি দিয়ে গড়া রথ।
২. রথের দড়ি – বাসুকি। সেজন্যে বলা হয়, রথের দড়ি ধরলে পুণ্য হয়। মূলত, বাসুকির কৃপা লাভ হয়।
৩. পুরীর রথের ৪২ টি চাকা। (বলদেবের রথের ১৪ টি, জগন্নাথের রথের ১৬ টি, সুভদ্রাদেবীর ১২ টি)।
৪. পুরীর রথ চলার সময় রাস্তায় চাকার তিনটি দাগ পড়ে – তা হল গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতী। যারা বার্ধক্যজনিত কারণে বা অন্যান্য কারণে রথের দড়ি ধরতে পারেন না, তারা যদি চাকার এই তিনটি দাগের ধুলি গ্রহণ করেন, বা এই ত্রিদাগে গড়াগড়ি দেন, তাহলে গঙ্গা-যমুনা -সরস্বতীতে অবগাহনের ফল লাভ করেন।


৫. জগন্নাথের রথের নাম নন্দীঘোষ বা কপিধ্বজ । এই রথের ১৬টি চাকা। রথের রঙ পীত। ষোল চাকা মানে দশ ইন্দ্রিয় আর ছয় রিপূ । যা থাকে ভগবানের নীচে।
৬. বলভদ্রের রথের নাম হল তালধ্বজ বা হলধ্বজ। ১৪টি চাকা আছে। ১৪টি চাকা মানে ১৪টি ভুবন। বলভদ্র হল গুরুতত্ত্ব। গুরুতত্ত্বের অধীন ১৪টি ভূবন।
৭. দেবতাদের দ্বারা প্রদত্ত সুভদ্রা দেবীর রথের নাম ‘দর্পদলন’ বা ‘পদ্মধ্বজ’। রথের উচ্চতা ৩১ হাত। এই রথে ১২ টি চাকা আছে। এর অর্থ ভজনের সময় বার মাস। প্রতিদিন ভক্তিঙ্গ যাজন করতে হবে।
৮. সম্পূর্ণ রথ শুধুমাত্র কাঠের তৈরি, ফলে রথ চলার সময় কাঠের কড়কড় শব্দ হয়, এটিকে বলা হয় বেদ।
৯. ২০৬ টি কাঠ দিয়ে জগন্নাথের রথ হয়। ঠিক আমাদের দেহেও ২০৬ টি হাড়।
১০. রথ যখন চলে প্রথমে থাকে বলদেবের রথ। কারণ বলদেব দাদা। আবার জগত গুরুতত্ত্ব। তিনিই তো নিত্যানন্দ ।সবার জীবনে আগে গুরুকৃপা আসতে হবে।


তারপর চলে সুভদ্রার রথ। সুভদ্রা হল ভক্তি তত্ত্ব। গুরুকৃপার পর আসে ভক্তিমহারাণী। কারণ ভক্তির ঠিকানা শ্রীগুরুপদে। “শ্রীগুরুচরণপদ্ম কেবল ভকতিসদ্ম। বন্দো মুই সাবধান মতে।” গুরুদেব হল ভগবানের করুনার মুর্তি।
তারপর যায় জগন্নাথের রথ।
প্রথমে গুরুদেব, তারপর ভক্তি, তারপর ভগবান জগন্নাথ।
১১. রথের দর্শনে শ্রী চৈতন্যমহাপ্রভু নৃত্য করছেন। অপলক নয়নে দর্শন করছেন জগন্নাথ। রথ চলতে চলতে মাঝে মাঝে থেমে যায়।
এর কারন রাধা ভাবে বিভোর মহাপ্রভুকে ভাল করে দেখার জন্য রথ একটু থামে আবার চলে। অনেক ভক্তের মাঝে মহাপ্রভুকে না দেখে জগন্নাথ থেমে যায়। রথ অপ্রকৃতি কারন তা প্রভু জগন্নাথের ইচ্ছা শক্তিতে রথ চলে।
আজও রথে অচল জগন্নাথকে দেখে রাধা ভাবে বিভোর মহাপ্রভু আনন্দে নেচে নেচে যায়।।

About trafnan

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

*

x

Check Also

জাতিসংঘের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়লেন প্রধানমন্ত্রী

চৌধুরী তুহি, ঢাকা: জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে যোগ দিতে রবিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ...

করোনা ভাইরাস: ভারতে ”জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন” জারি

  করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে এই প্রথম গোটা ভারতজুড়ে জারি হল জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা আইন। এর ...

করোনা আক্রান্ত ও দুস্থ গৃহবন্দীদের জন্য বেতনের টাকায় মুশফিকদের ফান্ড গঠন

করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে দেশে করোনা আক্রান্ত ও গরিব গৃহবন্দীদের জন্য নিজেদের বেতনের অর্ধেক টাকা ...

”নির্বাচনের পরিবেশ খুব ভালো এবং শান্ত”

আগামি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ খুব ভালো এবং শান্ত বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আবুল ...