অধ্যাপক আফতাব আহমেদ হত্যামামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মফিকুল হাসান তৃপ্তিকে সিআইডি গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদনসহ বৃহস্পতিবার তাকে ঢাকার আদালতে নেওয়ার পর তার আইনজীবী অভিযোগ করেছেন, ”তৃপ্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ হাই কোর্টের আদেশ লঙ্ঘন করেছে।” পরে ঢাকার মহানগর হাকিম ফাহদ বিন আমিন চৌধুরী রিমান্ডের আবেদনে কোনো আদেশ না দিয়ে তৃপ্তির আইনজীবীদের হাই কোর্টের আদেশটি আগামী সোমবার নিয়ে আসতে বলেন। সেদিন পর্যন্ত যশোরের শার্শার সাবেক এই সংসদ সদস্যকে কারাগারে রাখার আদেশ দেন হাকিম।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আফতাব হত্যাকাণ্ডের ১২ বছর পর এতে জড়িত সন্দেহে বৃহস্পতিবার ঢাকার বনানীর বাসা থেকে তৃপ্তিকে গ্রেপ্তার করে মামলাটির তদন্ত সংস্থা সিআইডি। বিএনপির সাবেক কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক তৃপ্তি জরুরি অবস্থা জারির পর ২০০৮ সালে ‘সংস্কারপন্থি’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়ায় দল থেকে বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। সম্প্রতি তিনি আবার স্থানীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হচ্ছিলেন।
২০০৬ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোডে শিক্ষকদের আবাসিক ভবনে একদল দুর্বৃত্ত ঢুকে ড্রয়িংরুমে গুলি করে ড. আফতাবকে হত্যা করে।
তখন রমনা থানায় একটি হত্যা মামলা হয় পরিবারের পক্ষ থেকে। পরে মামলাটি পুলিশ ও ডিবি পুলিশের হাত ঘুরে সিআইডিতে হস্তান্তর হয়।
গ্রেপ্তার তৃপ্তিকে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক সুব্রত কুমার সাহা; তিনি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করে তিনি বলেন, “এ মামলার আসামি সানজিদুল হাসান ইমনের ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মফিকুল হাসান তৃপ্তি হত্যার সঙ্গে জড়িত মর্মে প্রকাশ পায়, যার ভিত্তিতে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
অন্যদিকে রিমান্ড বাতিল করে তৃপ্তির জামিন চেয়ে শুনানি করেন আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ওমর ফারুক, নূরুজ্জামান তপন।
মাসুদ তালুকদার বলেন, আফতাব হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হতে পারেন বলে আঁচ পেয়ে ২০০৮ সালে একটি রিট আবেদন করেছিলেন তৃপ্তি। তখন হাই কোর্ট বেঞ্চ পরোয়ানা ছাড়া তাকে গ্রেপ্তার না করার রুল দেয়।
“সেই রুলটি শেষ বহাল আছে। সুতরাং তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে, যা সুস্পষ্টভাবে আদালত অবমাননা। তাছাড়া আজও সিআইডি রিমান্ড আবেদনের শুরুর লাইনেই তাকে এ মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি বলেছেন।”
হাকিম হাই কোর্টের ওই আদেশ দেখতে চাইলে তৃপ্তির আইনজীবীরা এজন্য সময় চেয়ে বলেন, তারা পরে তা দেখাতে পারবেন। এরপর হাকিম ফাহদ বিন আমিন সোমবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রেখে তৃপ্তিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।