জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের সংলাপ নিয়ে সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, “ক্ষমতা ৬০-৪০ ভাগাভাগির সংলাপ যেন না হয়, সংলাপ হতে হবে জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য।”
মঙ্গলবার বাম গণতান্ত্রিক জোট আয়োজিত ‘অবাধ, নিরপেক্ষ, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য’ সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির দাবিতে রাষ্ট্রপতি বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
সেলিম বলেন, “শুনলাম ১ নভেম্বর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সংলাপের জন্য প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। এটা একটা ভাল পদক্ষেপ, তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।”
কিন্তু বাম জোটকে আলোচনায় না ডাকার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি বলেন, “আমাদের সঙ্গে আলোচনা করলে আমাদের যে আরও অতিরিক্ত দাবি আছে সেগুলোও আলোচনার সুযোগ হত। কিন্তু আলাপের জন্য আলাদা করে বেছে নিয়েছে তাদের, ভাল কথা করেন। আমরা সতর্ক দৃষ্টিতে সব কিছু পর্যবেক্ষণ করছি, কারণ সংলাপের নানান নমুনা আছে।”
অতীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ-ছাত্রদলের মধ্যে গোলাগুলির পর সংলাপের নামে দুই সংগঠনের নেতাদের ‘ভাগাভাগির’ উদাহরণ টেনে এক সময়ের ছাত্রনেতা সেলিম বলেন, “এভাবে ৬০-৪০ ভাগাভাগির ফয়সালা করার জন্য সংলাপ নয়, সংলাপ করতে হবে আমাদের জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য।”
কামাল হোসেনকে পাঠানো প্রধানমন্ত্রীর চিঠিতে ‘সংবিধানসম্মত সকল বিষয়ে’ আলোচনার যে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সে বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করে সিপিবি নেতা সেলিম বলেন, “সংবিধানের অধীনে আলোচনা করার নামে আপনি যদি বলেন- সংবিধানে ওই রকম কোনো বিধান নেই, এজন্য আলোচনা চলবে না, এই যুক্তিতে আমি রাজি না। সংবিধানে একটা অনুচ্ছেদ আলাদা করে আছে যে, সংবিধান সংশোধন করা সম্ভব। সংবিধান সংশোধন সাপেক্ষে যে কোনো প্রস্তাব আলোচনা করা যেতে পারে।”
জরুরি ভিত্তিতে সংসদের অধিবেশন ডেকে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধি সংবিধানে যোগ করার দাবি জানান মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম।
“প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারের কর্তাব্যক্তিরা বলেছেন, শিগগিরই নির্বাচনকালীন সরকার গঠিত হবে, এবং সেই সরকার শুধু রুটিন কাজ করবে। আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, এ দুটি কথা যদি আপনার মনের কথা হয়ে থাকে, তাহলে এ বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধানের অষ্টাদশ সংশোধনী বিল সংসদে পাস করার ব্যবস্থা করেন।
“দুই দিনের ভেতরে জরুরি ভিত্তিতে সংসদের অধিবেশন ডাকেন। এই সংশোধনী নিয়ে আসেন। বাঙালকে আর হাই কোর্ট দেখাবেন না।”
বাম গণতান্ত্রিক জোটের সমন্বয়ক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বাসদের সাধারণ সম্পাদক খালেকুজ্জামান, বজলুর রশিদ ফিরোজ, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ নেতা আবদুস সাত্তার, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মুশরেফা মিশু উপস্থিত ছিলেন।