একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন রাজনৈতিক জোট ১৪ দল এবং বিএনপি নিয়ে নবগঠিত জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মধ্যে সংলাপ আজ বৃহস্পতিবার। সন্ধ্যা ৭টায় গণভবনে এ সংলাপ হওয়ার কথা রয়েছে। সংলাপে ১৪ দলের নেতৃত্ব দেবেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা এবং ঐক্যফ্রন্টের নেতৃত্ব দেবেন গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেন। তবে সংলাপের পর প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া নৈশভোজে অংশ নেবে না জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতারা। সংলাপের আগেরদিনই এ তথ্য নিশ্চিত করেছে ঐক্যফ্রন্টের একাধিক নেতা।
সূত্রের খবর, গত রাতে সংলাপে অংশগ্রহণকারী জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নেতারা নৈশভোজে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিষয়টি আওয়ামী লীগকেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ”আমরা সংলাপে যাচ্ছি। তবে নৈশভোজে অংশ নেবো না।”
বিএনপির সূত্র জানিয়েছে, চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে আওয়ামী লীগের নৈশভোজে অংশ নেবেন না তারা। বিষয়টি বিএনপি নেতারা ফ্রন্ট নেতাদের জানালে তারা একমত পোষণ করেন।
জানা গেছে, নৈশভোজে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তের সাথে কৌশলগত কারণও আছে। এর বাইরেও সাম্প্রতিক কয়েকটি ঘটনা বিএনপিকে ক্ষুব্ধ করেছে। নৈশভোজে না যাওয়ার বিষয়টি বিএনপির জন্য প্রতিবাদও বলা হচ্ছে। যদিও বিষয়টি প্রকাশ্যে বলছেন না দলের নেতারা।
তারা বলছেন, সংলাপের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পর দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিচারিক আদালতের দেয়া রায় হাইকোর্ট বাড়ানো এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় সাজার রায় দেয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে জমা দেয়া বিএনপির সংশোধিত গঠনতন্ত্র গ্রহণ না করতে গতকাল হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন। নৈশভোজে অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্তের পেছনে এসব বিষয়ও কাজ করেছে।
তবে সূত্রগুলো বলছে, সংলাপ খুব খোলামেলা হলেও সেখানে আগামী নির্বাচন নিয়ে সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোনো আলোচনা বা সিদ্ধান্তে রাজি নয় আওয়ামী লীগ। সব আলোচনা যেন সংবিধানের মধ্যে থেকেই হয়, সে ব্যাপারে অটল থাকবে তারা। বিশেষ করে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সাজার বিষয় এবং নির্দলীয় সরকারের বিষয়ে কোনো কথা বলবেন না ক্ষমতাসীন জোটের নেতারা। খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়টি সম্পূর্ণ আদালতের ওপরই ছেড়ে দিবেন তারা।
প্রসঙ্গত, সংলাপ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেয়া ঐক্যফ্রন্টের দাবির মধ্যে কিছু নির্বাচনসংশ্লিষ্ট এবং কিছু নির্বাচনের বাইরে। নির্বাচনসংশ্লিষ্ট বেশ কিছু দাবি মানতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। এর মধ্যে আছে, সরকারের পদত্যাগ এবং সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনাসাপেে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার গঠন, ভোটের আগে সংসদ ভেঙে দেয়া ইত্যাদি।
এর বাইরে আছেবেগম খালেদা জিয়াসহ সব রাজবন্দীর মুক্তি, গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিদের নিয়ে নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন, ভোটগ্রহণে ইভিএম ব্যবহার না করা, বিচারিক মতা দিয়ে সেনাবাহিনী মোতায়েন, ভোটের আগে নতুন করে মামলা না দেয়া ইত্যাদি।