বাংলাদেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় ঐক্য ফ্রন্টের সংলাপ শেষে জোটের নেতার ভিন্নমত পোষণ করেছেন।
প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে অনুষ্ঠিত এই সংলাপ শেষে ড. কামাল মন্তব্য করেন। ”ভাল আলোচনা হয়েছে” অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির বলেছেন তারা সংলাপে ”সন্তুষ্ট নন।”
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সংলাপে অংশ নিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির স্থায়ী কমিটির কিছু সদস্যসহ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ২১-সদস্যের এক প্রতিনিধি দল গণভবনে যান। সন্ধ্যা ৭ টায় শুরু হওয়া ওই সংলাপে আওয়ামীলীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন সিনিয়র নেতাসহ ১৪ দলের ২১ সদস্য অংশ নেন।
প্রায় সাড়ে তিন ঘন্টা ধরে চলা সংলাপ শেষে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, সংসদ ভেঙে দিয়ে নিরপক্ষে সরকারের অধীনে নির্বাচনের যে দাবি বিরোধীদল করেছে, সে প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছে যে সংবিধানের বাইরে গিয়ে কোন কিছু করা হবে না।
খালেদা জিয়ার মামলা প্রত্যাহারের বিষয়টি সংলাপে উঠেছিল কি? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এই মামলা আমি ফাইল করিনি করেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তাই এ মামলা নিয়ে আমার কিছু করার নেই। এটা আদালতের ব্যাপার।
তবে ওবায়দুল কাদের জানিয়েছেন, নির্বাচনের সময়ে বিদেশি পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে সরকারের কোন আপত্তি নেই। একই সময় সরকার কারো সভা-সমাবেশে কোনো বাধা দেবে না বলেও নিশ্চিত করেন তিনি।
কিন্তু নির্বাচনের সময় সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়ার দাবি ‘যৌক্তিকৰ নয় বলে আওয়ামী লীগ মনে করে।”
বিরোধীদলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গণহারে মামলা দেয়ার প্রশ্নে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, তারা এবিষয়ে বিরোধীদলের কাছ থেকে তালিকা চেয়েছেন।প্রধানমন্ত্রী এগুলো খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন।
এর আগে সংলাপের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী হাসিনা প্রায় দশ বছর মেয়াদে তার সরকারের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড তুলে ধরে সূচনা বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, “দেশের মানুষ ভালো আছে। তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটছে।” ”দিনবদলের যে সূচনা করেছিলাম সেই দিন বদল হচ্ছে। এটাকে আরও সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।”
একই সময় তিনি সকলকে একসঙ্গে কাজ করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার আহ্বান করেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৮শে অক্টোবর জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে একটি চিঠিতে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই তাদের সাত-দফা দাবি নিয়ে সরকারকে আলোচনা বসার প্রস্তাব দিয়ে চিঠি দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সংলাপে বসতে রাজী হয় ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ সরকার।