সোনাইমুড়ী সংবাদদাতা,২৭মার্চ :
মসজিদে টানা দেড়মাস জামাতে পাঁচওয়াক্ত নামাজ আদায় করে সাইকেল উপহার পেল নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার ৪৩ শিশু-কিশোর। শুক্রবার (২৭ মার্চ) জুমার নামাজের পর তাদের হাতে পূর্বঘোষিত এ পুরস্কার তুলে দেয় মসজিদ কর্তৃপক্ষ। এসময় সাইকেলের পাশাপাশি সবাইকে সনদপত্রও তুলে দেয়া হয়। তবে করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকায় জনসমাগম এড়িয়ে সংক্ষিপ্ত পরিসরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে তারা।
জানা গিয়েছে, শিশু-কিশোরদের জামাতে নামাজ আদায়ে উৎসাহী করতে ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ নেন সোনাইমুড়ী হামিদিয়া কামিল মাদ্রাসা মসজিদের খতিব মুফতি হুমায়ূন কবির। এতে অর্থায়ন করেছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও সমাজসেবক নুরুল ইসলাম নুরু। উদ্যোগ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করেন মুয়াজ্জিন কবির হুসাইন ও মসজিদ কমিটির সকল সদস্য।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই প্রতিযোগিতা চলে ২০ মার্চ পর্যন্ত। প্রথম পর্বে ৭০ কিশোর নিবন্ধন করে। তাদের মধ্যে ৪৩ জন টানা ৪৫ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামাতে আদায় করে। সেই অনুযায়ী প্রত্যেককে একটি করে বাইসাইকেল উপহার দেয়া হয়। পাশাপাশি নিবন্ধনকারী যারা নিয়মিত জামাতে নামাজ আদায় করতে পারেনি তাদের মধ্যে থেকে বাছাই করে আরও দশজনকে সান্তনা পুরস্কার হিসেবে একটি করে স্কুল ব্যাগ দেয়া হয়।

মসজিদে টানা দেড় মাস জামাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে সাইকেল উপহার পেয়েছে ৪৩ শিশু-কিশোর।
পুরস্কার বিজয়ী সাকিব মাহাথির জানায়, ‘আমরা এতদিন নামাজ আদায় করেছি। একসঙ্গে সবাই মসজিদে এসেছি। আমার সঙ্গে অনেকের বন্ধুত্বও গড়ে উঠেছে। পুরস্কার হাতে পেয়ে অনেক ভালো লাগছে। এই সাইকেল দিয়ে নিয়মিত স্কুলে যেতে পারব। তবে এখন থেকে নিয়মিত মসজিদে আসব ইনশাআল্লাহ।’
মসজিদের খতিব মুফতি হুমায়ুন কবির বলেন, ‘আমার দীর্ঘদিনের ইচ্ছা ছিল শিশুকিশোরদের মসজিদমুখী করা। শেষ পর্যন্ত সবার প্রচেষ্টায় এমন একটি উদ্যোগ সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি। এর ফলে একটি ছেলেও যদি পরবর্তী জীবনে নামাজ আঁকড়ে ধরে তাহলে আমাদের উদ্যোগ সার্থক হবে।’ এর আগেও আমি বিভিন্ন বয়সী মুসল্লীদের বিনামূল্যে কুরআন শিক্ষা দেয়ার কার্যক্রম পরিচালনা করেছি। আমার ইচ্ছা সমাজকে ইসলামের আদলে গড়ে তোলা বলে জানান মুফতি হুমায়ুন কবির।
প্রসঙ্গত, ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগের ধারণাটি আসে তুরস্কের ইস্তাম্বুলের ফাতিহ অঞ্চলের সুলতান সেলিম মসজিদ কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রথম এ ধরনের উদ্যোগ হতে নেয়া হয়। টানা ৪০ দিন ফজরের নামাজে অংশ নেয়া কিশোরদের সাইকেল ও বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দেয় ওই মসজিদ কর্তৃপক্ষ।