তৌহিদুর রহমান তুহি, ঢাকা:
বাংলাদেশে মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের সম্পাদক আদিলুর রহমান খান ও পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের ২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। বৃহস্পতিবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত এ রায় ঘোষণা করেন।
আলোচিত সমালোচিত তথ্যপ্রযুক্তি আইনে করা ২০১৩ সালের এক মামলায় এ রায় দেওয়া হয়, যা তথ্যপ্রযুক্তি আইনের প্রথম মামলা।
এদিন মামলার রায় পর্যবেক্ষণ করতে বিভিন্ন দেশের দূতাবাস, দেশি-বিদেশি গণমাধ্যম ও মানবাধিকার সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রায় প্রকাশে কয়েক ঘটার মধ্যেই এই রায়ে “উদ্বেগ” প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছে ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। বিবৃতিতে তারা বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র মানুষের অধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতার প্রচার ও সুরক্ষায় মানবাধিকারকর্মী এবং সুশীল সমাজ সংগঠনগুলোর কার্যক্রমকে দৃঢ়ভাবে সমর্থন করে। আমাদের “২০২২ কান্ট্রি রিপোর্ট অন হিউম্যান রাইটস ইন বাংলাদেশ” প্রতিবেদনে “অনলাইন এবং অফলাইনে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতা” এবং মানবাধিকার সংগঠনগুলো “বিশেষ সরকারী বিধিনিষেধের সাথে পরিচালিত” হওয়ার কথা তুলে ধরা হয়েছে। এ অবস্থায় ঢাকাস্থ যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস মানবাধিকার সংগঠন অধিকার’ এর সম্পাদক আদিলুর রহমান খান এবং পরিচালক এ এস এম নাসির উদ্দিন এলানের বিরুদ্ধে আজকের রায়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছে এবং মনে করছে এটি মানবাধিকারকর্মী এবং সুশীল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ গণতান্ত্রিক ভূমিকা পালনের সক্ষমতাকে আরও দুর্বল করে দিতে পারে। যেই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, অধিকার কয়েক দশক ধরে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেছে এবং প্রতিবেদন তৈরি করেছে। গণতন্ত্রের অপরিহার্য অংশ হিসেবে আমরা মত প্রকাশের স্বাধীনতা এবং প্রাণবন্ত নাগরিক সমাজকে অব্যাহতভাবে সমর্থন করি এবং মৌলিক অধিকার নিয়ন্ত্রণের প্রচেষ্টার বিরোধিতা করি।”
প্রসঙ্গত ২০১৩ সালে ৫ মে ঢাকার মতিঝিলের শাপলা চত্বরে বাংলাদেশের ইসলামপন্থী সংগঠন হেফাজত ইসলাম সমাবেশ করে সেখানে বসে পরে এবং রাত্রিযাপনের ঘোষণা দেয়। তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে ওই রাতেই যৌথ অভিযান পরিচালনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ওই অভিযানে ৬১ জন নিহত হয় বলে দাবি করেছিল অধিকার।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, আসামি আদিলুর ও এলান ৬১ জনের মৃত্যুর ‘বানোয়াট, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও মিথ্যা’ তথ্য দিয়ে প্রতিবেদন তৈরি ও প্রচার করে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি করে আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নের অপচেষ্টা চালায়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সরকার ও রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি দেশে-বিদেশে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করে।’