২২ বছরে চীনের পোশাক রপ্তানি সর্বনিম্নে , বাংলাদেশের জন্য খুলছে নতুন দুয়ার

প্রতীকী ছবি প্রতীকী ছবি

যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পোশাক আমদানি মে মাসে নেমে এসেছে ২২ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে। দেশটির আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কমিশনের (ইউএসআইটিসি) সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে মাত্র ৫৫৬ মিলিয়ন ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। এপ্রিল মাসে যেখানে এই পরিমাণ ছিল ৭৯৬ মিলিয়ন ডলার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মার্কিন সরকারের কঠোর শুল্ক নীতির ফলেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৫ সালের এপ্রিল থেকে চীনা পোশাকে সর্বোচ্চ ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করেন। এর ফলে অনেক মার্কিন খুচরা প্রতিষ্ঠান চীন থেকে মুখ ফিরিয়ে ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ, ভারত ও মেক্সিকোর মতো দেশে উৎপাদন সরিয়ে নিতে শুরু করে।

মে মাসে চীনা আমদানির এমন পতন মোটেও স্বাভাবিক নয়, বলেন ইউনিভার্সিটি অফ ডেলাওয়ারের ফ্যাশন ও অ্যাপারেল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক শেং লু। এটি স্পষ্টভাবে একটি রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তের ফল।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি ছিল ১.৬৯ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের জানুয়ারির তুলনায় ১৫ শতাংশ বেশি। তখন অনেক প্রতিষ্ঠান ট্রাম্পের সম্ভাব্য শুল্ক নীতির আশঙ্কায় আগাম আমদানিতে ঝুঁকেছিল।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বাড়ছে চাহিদা

পোশাক উৎপাদন খাতে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এরইমধ্যে লাভবান হতে শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক অডিটিং প্রতিষ্ঠান কিউআইএমএ জানিয়েছে, তাদের পরিদর্শন ও অডিট ডেটা অনুযায়ী, ২০২৫ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে চীনে মার্কিন সোর্সিং কমেছে প্রায় ২৫ শতাংশ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় বেড়েছে ২৯ শতাংশ।

বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, ভারত- সবগুলো দেশই এখন মার্কিন রিটেইলারদের নতুন গন্তব্য হিসেবে উঠে আসছে। একইসাথে মেক্সিকোর পোশাক রপ্তানিও বেড়েছে। মে মাসে দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে ২৫৯ মিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।

চুক্তি সত্ত্বেও চীন থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে মার্কিন প্রতিষ্ঠান

যদিও যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে একটি নতুন বাণিজ্য চুক্তি সই হয়েছে, তবে অধ্যাপক লু’র মতে, তা যথেষ্ট নয়। চীনের উপর নির্ভরতা কমিয়ে অন্য দেশে সরিয়ে নেয়ার যে পরিকল্পনা বহুদিন ধরেই চলছে, তা এখন আরও গতি পাচ্ছে।

কিউআইএমএ সতর্ক করেছে, আগামী মাসগুলোতে মার্কিন সাপ্লাই চেইন আবার চাপের মুখে পড়তে পারে। কারণ, চীন ছাড়া অন্যান্য দেশের উপর অস্থায়ীভাবে দেয়া শুল্ক বিরতি খুব শীঘ্রই শেষ হতে চলেছে, আর সেই সময়েই শুরু হবে মার্কিন ছুটির মৌসুমের বড় কেনাকাটার প্রস্তুতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *