যুবলীগ নেতা আশরাফ আলীকে তুলে নিয়ে মারধরের অভিযোগ

মুহাম্মদ আশরাফ আলী মুহাম্মদ আশরাফ আলী

রাজধানীতে যুবলীগ নেতার ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাত ১২টার দিকে মায়ের জন্য ওষুধ কিনতে বাসা থেকে বের হওয়ার পর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মুহাম্মদ আশরাফ আলীকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে বেদম মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

আশরাফ আলী জানান, ‘কালো গ্লাস লাগানো দুটি মাইক্রোবাসে করে ১৫-২০ জনের একটি দল ঘটনাস্থলে আসে। তারা হঠাৎ তাকে ঘিরে ধরে জোরপূর্বক গাড়িতে তুলে নেয়। পরে যাত্রাবাড়ি এলাকায় একটি বাড়িতে নিয়ে রাতভর তার ওপর নির্যাতন চালানো হয়। এতে তার কান, পা ও পিঠে গুরুতর আঘাত লাগে।

এ সময় সেখানে বিএনপির কেন্দ্রীয় বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য সালাহ উদ্দিন এবং তার ছেলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাবেক যুগ্ম-আহ্বায়ক নবী উল্লাহ নবীসহ ডজনখানেক লোকজন উপস্থিত ছিলেন। তারা আশরাফ আলীকে রাজনীতি ছেড়ে দিতে বিভিন্ন হুমকিধামকি দেন এবং ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। এক পর্যায়ে তাদের কথা মেনে নেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে, ভোররাতে সারুলিয়ার রাস্তায় তারা আশরাফ আলীকে ফেলে রেখে যায়।

পরে স্থানীয়রা উদ্ধার করে আশরাফ আলীকে প্রথমে সেবা হাসপাতালে নেন, তবে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, তার শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। হাত, বুক ও পিঠে গুরুতর জখম রয়েছে।

আশরাফ আলীর পরিবারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এটি ছিল পরিকল্পিত হামলা। তার ভাই বলেন, “আমার ভাইকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে টার্গেট করা হয়েছে। ও কোনো অপরাধ করেনি, শুধু যুবলীগে কাজ করার কারণেই এই অবস্থায় পড়তে হয়েছে।”

পরিবার অভিযোগ করেছে, হামলাকারীদের পরিচয় স্পষ্ট হওয়া সত্ত্বেও এখনো পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করেনি পুলিশ। তারা দ্রুত দোষীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান।

এ বিষয়ে বিএনপির পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে দলের অভ্যন্তরীণ সূত্রে দাবি করা হচ্ছে, ঘটনাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ ঘিরে তুলছে। তাদের মতে, প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছে তা যাচাই না করেই যুবলীগ ও আওয়ামী লীগ দোষারোপ করছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জাতীয় রাজনীতির অস্থির পরিস্থিতির মধ্যে এই ঘটনাটি নতুন করে উত্তেজনা ছড়াতে পারে। বিশেষ করে রাজধানীতে সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি নেতারা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। যুবলীগ নেতার ওপর হামলার ঘটনা রাজনৈতিক সহিংসতার চক্রকে আরও তীব্র করতে পারে।

ঢাকা মহানগর পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, বিষয়টি তাদের নজরে এসেছে। অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য নেয়া হয়েছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *